দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়েরকৃত মামলা মাথায় নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে সাবেক ইউপি মেম্বার সহ উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের ১০ জন কর্মকর্তা। ইতি মধ্যে দুদকের ৫টি মামলার আসামী বহুল আলোচিত ও সমালোচিত পালংখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ফজল কাদের (ভূট্টু) কে গ্রেফতার করতে একাধিকবার হানা চালিয়েও আটক করা সম্ভব হয়নি। অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচী কর্মসৃজন প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্বসার্তের অভিযোগে এ মামলা গুলো দায়ের করা হয়।
স্থানীয় দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২-১৩ ও ২০১৩-২০১৪অর্থ বছরের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধিনে উখিয়া অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও প্রকল্প সভাপতি উন্নয়নের নামে সরকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত টেক অফিসারদের সাথে গোপন আতাঁত করে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এমনকি কর্মসৃজন প্রকল্পের ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সরকারী টাকা আত্বসার্তের সংবাদ দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকা সহ জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এদিকে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিকদার বাদী হয়ে কর্মসৃজন প্রকল্পের ৪ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা লুটপাট অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। একই সময় নন কষ্ট খাতে ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা আত্বসার্তের অভিযোগও আনা হয়।
এদিকে উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো: শফি উল্লাহর নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ২০১৬সালের ১০ মার্চ থেকে ১২ মার্চ ৩ দিন কর্মসৃজন প্রকল্পের বাস্তবায়িত প্রকল্প গুলো পরিদর্শন করেন। ওই সময় পরিদর্শন কালে কর্মসৃজনের ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো: শফি উল্লাহ স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীদেরকে জানিয়েছে। সচেতন নাগরিক সমাজের মতে আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক মেম্বার ফজল কাদের ভুট্টুর পরিচালনাধীন কর্মসৃজন প্রকল্পে ভয়াবহ দুর্নীতি ও লুটাপাটের চিত্র সরজমিন পরিদর্শন কালে দুদকের তদন্ত টিমের কাছে ধরা পড়ে।
পরে অধিকতর দতন্ত শেষে উপ-পরিচালক মো: শফি উল্লাহ বাদী হয়ে গত ২০১৬ সালের ১৩ জুন দুর্নীতি দমন আইনে উখিয়া থানায় ৭টি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং হচ্ছে ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮। তৎমধ্যে অধিকাংশ মামলার আসামী হচ্ছে পালংখালী ইউনিয়নের তৎকালীন মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা ফজল কাদের ভুট্টু। এছাড়াও অপর আসামীরা হচ্ছে সাবেক পিআইও শফিউল আলম শাকিল, সাবেক অফিস সহকারী জামাল হোসেন, সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন, ইউআরসি অফিসার অশোক কুমার আশ্চর্য্য, সাবেক মেম্বার আব্দু শুক্কুর, সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান, সাবেক মেম্বার মোরশেদ আলম ও সাবেক মেম্বার আবু তাহের।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ইতিমধ্যে সাবেক পিআইও শফিউল আলম শাকিবকে দুদক অভিযান চালিয়ে আটক করলেও আরও ১০ জন আসামীরা এখনো অধরা রয়ে গেছে। বলতে গেলে দুদকের মামলা মাথায় নিয়ে আসামীরা সর্বত্র বিচরণ করছে। তবে এও ঠিক কখন দুদকের জালে আটকা পড়বে এমন আতংকে মাঝে মধ্যে আত্বগোপনেও থাকে তারা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো: শফি উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের একাধিক মামলার আসামী পালংখালী ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ফজল কাদের ভুট্টুকে আটক করতে তার বালুকালীস্থ বাসভবনে একাধিক বার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আত্বগোপনে থাকায় আটক করা সম্ভব হয়নি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুদকের মামলার আসামীরা কেউ পার পাবে না।
পাঠকের মতামত: